গ্র্যান্ডশেখ আবদ’আল্লাহ আদ-দাগেস্তানি ق র সাথে সাইয়িদিনা উয়াইস আল কারানি (রা) -র অলৌকিক সাক্ষাৎ।
মাওলানা শেখ হিশাম কাব্বানি।
গ্র্যান্ডশেখ আবদ’আল্লাহ আদ-দাগেস্তানি ق বলেন,
আমার শেখ, শেখ শরাফউদ্দিন আদ-দাগেস্তানি ق ততো দিনে দেহত্যাগ করেছেন। আমি তুরস্কে যাবার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আমার শেখ এর মাজারের ঠিক পাশেই যে মসজিদ সেখানে আমি খালওয়ার (সেকলুশন) ভিতরে ছিলাম। একদিন ভোররাতে আমি সেই মসজিদে নামাজ পড়ছিলাম। সেই রাতটা ছিল ভীষণ ঠান্ডা। চারিদিক বরফে সাদা। আমার হাড়ের ভিতরে আমি প্রচন্ড ঠান্ডা অনুভব করছিলাম। আকাশ থেকে তুষার মাটিতে পড়ছে, গাছের উপরে পড়ছে, সেটার আওয়াজ আমি শুনতে পাচ্ছিলাম। দূরে বোনের মধ্যে শিয়াল ডাকছে সেই আওয়াজও আমি শুনতে পাচ্ছিলাম। তখন আমি একটা কন্ঠস্বর শুনলাম। কেউ একজন আমার নাম ধরে ডাকছে, “আবদ’আল্লাহ এফেন্দি”। [তুর্কি ভাষায় এফেন্দি অর্থাৎ জনাব] আমি এদিক ওদিক তাকালাম কিন্তু কাউকে দেখলাম না। এরপর সেই আওয়াজটা আমি আরেকবার শুনলাম, “”আবদ’আল্লাহ এফেন্দি”। আমি আবারও তাকালাম কিন্তু এইবারও কাউকে দেখতে পারলাম না। আমি জানতাম যে এটা আমার শেখের কণ্ঠস্বর। তার গলার আওয়াজ শুনে আমি নিজের ভিতর অনেক বেশি সাহস আর শক্তি অনুভব করলাম। জুতা না পড়েই দৌড়ে আমি বাইরে চলে গেলাম। এমনকি সেই প্রচন্ড ঠান্ডার ভেতরে আমার উলের জোব্বাটা পর্যন্ত পড়লাম না। আমি আমার শেখকে দেখতে পেলাম। তিনি একেবারে জ্বলজ্বল করছিলেন, উজ্জ্বল একটা পাহাড়ের উপর দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি স্নেহভরা কন্ঠে আমাকে ডাক দিলেন, “আবদ’আল্লাহ এফেন্দি এদিকে আসো”। আমি জুতা পড়ার কথা চিন্তাও করলাম না। খালি পায়ে বরফের উপর দিয়ে আমি হাটা শুরু করলাম। আমার শেখের আত্মা থেকে এমন একটা ঐশ্বরিক ভালোবাসার উষ্ণতা আমি অনুভব করছিলাম যে ঠান্ডার বদলে তখন আমার খুব গরম, খুব ভালো বোধ করা শুরু হল। আমি তার কাছে পৌঁছে গেলাম। তিনি বললেন, “ও আমার সন্তান, আজকে রাত্রে নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদেশে আমি তোমাকে সাইয়িদিনা উয়াইস আল কারানি (রা) -র সাথে পরিচয় করিয়ে দেব।
এরপর তিনি আমাকে বললেন, ‘আসো আমার হাত ধরো’। তার হাত ধরতে পেরে আমার কি যে ভালো লাগলো। যেই মুহূর্তে আমি তার হাত ধরলাম আমি দেখলাম যে আমি আর সেখানে নাই। আমার চারিদিকে অনেক আউলিয়া দাঁড়িয়ে আছেন। আল্লাহর নবী মুহাম্মদ ﷺ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে। সাইয়িদিনা উয়াইস আল কারানি (রা) সেখানে বসে ছিলেন। আমরা প্রবেশ করলাম আর দেখলাম যে দুইটা জায়গা সেখানে আমাদের বসার জন্য খালি রেখে দেয়া হয়েছে। আমরা সবাইকে সালাম দিয়ে আমাদের জায়গায় বসে গেলাম। তখন সাইয়িদিনা আলি রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু উঠে দাঁড়ালেন এবং বললেন, “এই প্রথমবারের মতো এই গোপন রহস্য আমরা আওলিয়াদের কাছে দিচ্ছি। আমরা মাত্র অনুমতি পেয়েছি নবী মুহাম্মদ ﷺ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে থেকে এই গোপন রহস্য কে প্রকাশ করার”।
আমি সেখানে ৭০০৭ জন নকশবন্দি দরবেশকে দেখতে পাইলাম। তাদের ভেতরে ছিলেন ৩১৩ জন আউলিয়া যারা নকশবন্দি এবং ৩১৩ জন রসূলের অনুসারী। আমার তরিকার সমস্ত গ্র্যান্ডশেখ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তখন সাইয়িদিনা আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু সবাইকে এবং বিশেষ করে আমাকে এই কথাগুলি বললেন:
সাইয়িদিনা আলি (রা) বললেন :
আল্লাহর নবী যখন দেহত্যাগ করেছিলেন তখন তিনি আমাকে এবং সাইয়িদিনা ওমর রাদিয়াল্লাহু তা’আলাকে তার কাছে ডেকে বললেন, “আমি মারা যাওয়ার পর যেই কাপড়গুলো আমি পরে আছি সেগুলা নিয়ে তোমরা সাইয়িদিনা ওয়াইজ আল কারানি (রা) -র কাছে গিয়ে দিয়ে আসবে। এটা হচ্ছে আমার পক্ষ থেকে তার জন্য একটা ট্রাস্ট। তোমরা ওয়াইজ আল কারানি (রা) -কে অমুক একটা জায়গায় পাবে”।
সাইয়িদিনা আলি (রা) আরো বললেনঃ
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকাল করার আগে তিনি প্রচণ্ড ভাবে ঘামছিলেন। তিনি দেহত্যাগ করার পর তার ঘামে ভেজা কাপড় গুলিকে আমরা তার ট্রাস্ট হিসেবে নিয়েছিলাম। তিনি যেভাবে আমাদেরকে বলেছিলেন আমরা ঠিক সেভাবে সাইয়িদিনা ওয়াইজ আল কারানি (রা) -কে খুঁজতে বের হলাম। যতজনকে আমরা তার কথা জিজ্ঞেস করলাম কেউই আমাদেরকে তার খবর দিতে পারলেন না। তখন সাইয়িদিনা ওমর রাদিয়াল্লাহু তায়ালা বললেন, “ও আলি, আমরাতো কতজনকেই জিজ্ঞেস করলাম আর কেউই তার খোঁজ নিতে পারছে না। তাহলে চলেন আমরা এখন ফিরে যাই”। তখন আমি তাকে বললাম, “ও ওমর সেটা অসম্ভব। আল্লাহর নবী ﷺ আমাদেরকে বলেছেন যে তিনি এখানে আছেন কাজেই আমাদেরকে তাকে খুঁজে বের করতেই হবে। হয়তো তাকে অন্য কোন নামে মানুষ জানে। তখন আমরা জিজ্ঞেস করা শুরু করলাম, ‘আপনারা কি চিনেন এখানে এমন কাউকে যে কিনা গরু ছাগল চড়িয়ে বেড়ায়। তিনি তার মায়ের যত্ন নেন আর কখনোই তার মাকে ছেড়ে কোথাও যান না’। তখন কিছু মানুষ বলল, ‘হ্যাঁ আমরা তাকে চিনি কিন্তু তার নাম কিন্তু ওয়াইজ আল কারানি নয়, তার নাম হলো আবদ’আল্লাহ’। তারা আমাদেরকে দেখিয়ে দিল উনি কোথায় থাকেন?
আমরা তার বাড়িতে পৌঁছে দেখলাম একটু দূরে একটা মানুষ বসে আছে তার পিঠটা আমাদের দিকে ফেরানো। আমরা একটু কাছে এগিয়ে যেতেই তিনি ওই ভাবে বসে থাকতে থাকতেই আমাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, “ও আলি, ও ওমর, আমাকে আমার ট্রাস্ট দাও”। সাথে সাথে তাকে আমরা আল্লাহর নবী ﷺ -র জোব্বাটা দিয়ে দিলাম। তিনি উঠে দাঁড়ালেন, জোব্বাটাকে চুমা দিলেন। তিনি সেটাকে তার বুকের উপরে ধরলেন আর তারপরে জোব্বাটাকে পরে ফেললেন। তিনি তিনবার বললেন, “আমি গ্রহণ করছি, আমি গ্রহণ করছি, আমি গ্রহণ করছি”। আমরা ভাবছিলাম কেন তিনি জোব্বাটাকে চুমা দিলেন আর তারপরে ওই কথাগুলো বললেন। কেননা তিনি তো কখনোই আল্লাহর নবী ﷺ কে সামনাসামনি দেখেন নাই। কিন্তু তাকে এই কথা জিজ্ঞেস করতে আমাদের সংকোচ বোধ হচ্ছিল।
তখন উয়াইস আল কারানি (রা) ওমর (রা) -র দিকে তাকিয়ে বললেন, “ওমর তুমি আল্লাহর নবী ﷺ কে জীবনে কয়বার দেখেছো”। ওমর (রা) এই প্রশ্নে ভীষণভাবে আশ্চর্য হয়ে গেলেন। তিনি বললেন, “এটা তো খুবই আজব একটা প্রশ্ন। আমিতো আমার সারা জীবনই আল্লাহর নবী ﷺ -র সাথে কাটিয়ে দিলাম”। উয়াইস আল কারানি (রা) ওমর (রা) কে বললেন, “আপনাকে আমি এই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করছি তার একটা কারণ আছে আপনি সত্যি সত্যি আসলে তাকে কয়বার দেখেছেন?” ওমর (রা) জিজ্ঞেস করলেন, “আপনি কি বুঝাতে চাচ্ছেন? আমিতো তার সাথে সব সময় ছিলাম!” উয়াইস আল কারানি (রা) তখন ওমর (রা) -কে বললেন, “ঠিক আছে তাহলে আপনি আমাকে তার বর্ণনা দিন”। ওমর (রা) তখন তাকে আল্লাহর নবী ﷺ -র বর্ণনা দেয়া শুরু করলেনঃ তার চোখ, তিনি দেখতে কিরকম ছিলেন, তার শরীরটা কিরকম ছিল, ইত্যাদি। তখন উয়াইস আল কারানি (রা) তাকে বললেন, “হে ওমর। এই বর্ণনা তো যে কেউ দিতে পারে, এমনকি যারা কিনা তাকে দেখেও অবিশ্বাস করেছে, তারাও”।
তখন উয়াইস আল কারানি (রা) আমার দিকে তাকালেন এবং জিজ্ঞেস করলেন, “হে আলী। আপনি কতবার আল্লাহর রাসূল কে দেখেছেন?” আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে তিনি আসলে কি জিজ্ঞেস করছেন। আমি তাকে উত্তর দিলাম, “ও উয়াইস। আমি আল্লাহর রাসূল ﷺ কে জীবনে মাত্র একবার দেখেছি”। এই কথা শুনে ওমর আমার দিকে আশ্চর্য হয়ে তাকালেন। আমি বললাম, “একবার আমি উনার দিকে তাকিয়ে ছিলাম। তখন তিনি আমাকে বলেছিলেন, ‘হে আলি, আমার নাভি থেকে উপরের দিকে তাকিয়ে দেখো’। আমি তার নাভি থেকে উপরের দিকে তাকিয়ে দেখলাম যে পুরা কুল মাখলুকাত এমনকি সাত আসমান পর্যন্ত আমার নবীকে দিয়ে ভরে গেছে। তার গলার উপরে আমি কোন কিছুই দেখতে পাইনি। কিন্তু সেটা ছিল লুত গাছের সবচাইতে দূরের জায়গা। তখন তিনি আমাকে বললেন, ‘এইবার আমার নাভি থেকে নিচের দিকে তাকিয়ে দেখো’। আমি তাকালাম আর আমি দেখলাম যে সমস্ত গ্রহ নক্ষত্র সমস্ত আসমান জমিন সবকিছু উধাও হয়ে গিয়েছে। সব জায়গার ভিতর আমি খালি আমার নবীকেই দেখতে পেলাম। তার নাভি থেকে তার হাঁটু পর্যন্ত। তার হাঁটু থেকে তার পা পর্যন্ত আমি কিছু দেখতে পাই নাই। তখন আল্লাহর নবী আমাকে বললেন, ‘এইবার আমার পুরা শরীরের দিকে তাকাও, আমার মাথা থেকে পা পর্যন্ত’। আমি তাকালাম আর এইবার পুরা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সবকিছুই উধাও হয়ে গেল। আমি যে দিকেই তাকালাম আমি সবখানে, চারিদিকে, কেবল নবী মুহাম্মাদ ﷺ কেই দেখতে পেলাম। তখন আমি বুঝতে পারলাম যে আল্লাহ্র ঐশ্বরিক উপস্থিতির অন্তরই হলেন মুহাম্মাদ ﷺ । (হাকিকাত-আল-মুহাম্মাদিয়া)। “
তখন সাইয়িদিনা উয়াইস আল কারানি (রা) আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, “আপনি নবী ﷺ সত্যিই দেখেছিলেন। আর এই কারনেই তিনি বলে গেছেন যে, ‘আমি জ্ঞানের শহর আর আলি তার দরজা’। আল্লাহ্ তাঁর ঐশ্বরিক জ্ঞান সাইয়িদিনা আবু বকর আস-সিদ্দিক (রা) কেও দিয়েছেন, যেই কারনে কিনা নবী ﷺ বলে গেছেন যে, ‘আল্লাহ্ আমার অন্তরে যেই জ্ঞান দিয়েছেন আমি তা আবু বকর আস-সিদ্দিকের অন্তরে ঢেলে দিয়েছি’। “
তাঁর এই কথার পর, সাইয়িদিনা ওমর (রা) সাইয়িদিনা উয়াইস আল কারানি (রা) কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আল্লাহ্র নবী ﷺ -র যেই জোব্বাটা আমরা আপনার কাছে নিয়ে আসলাম তাঁর তাৎপর্য কি?” তিনি জবাব দিলেন, “ও ওমর, এটা হলো সবচাইতে বড় রহস্যগুলার একটা, যা কিনা এই উম্মতের শেষের দিনগুলাতে উন্মোচিত করা হবে। নবী ﷺ দেহত্যাগ করার সময় তাঁর উম্মতের জন্য শাফায়াত চেয়ে গেছেন।”
এরপর তিনি বলেন, “তাঁর উম্মত হলো সমস্ত মানবকুল, আদম (আ) থেকে শেষ মানুষ পর্যন্ত। আর সেজন্যই আল্লাহ্ বলেছেন, ‘বল [হে নবী]: আমি তোমাদের সবার জন্যই বার্তাবাহক হয়ে এসেছি আল্লাহ্র কাছ থেকে, যিনি কিনা সমস্ত আসমান ও জমিনের রাজত্বের মালিক।” [৭: ১৫৮]। নবী ﷺ আল্লাহ্র কাছে উম্মতের জন্য শাফায়াত চেয়েছিলেন এবং আল্লাহ্ তাঁর সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন। আল্লাহ্ যত মানুষ সৃষ্টি করেছেন তাদের প্রত্যেকের জন্য তিনি শাফায়াত করেছেন। তিনি শাফায়াত চাচ্ছিলেন আর ঘামছিলেন। তাঁর পবিত্র ঘামের প্রতিটি বিন্দু এক একটি মানুষের জন্য শাফায়াত ছিলো। প্রতিটি মানুষের জীবনের সমস্ত পাপ আর গুনার বোঝা তিনি নিজের ঘাড়ে নিয়ে নিয়েছেন। দুনিয়া থেকে যাবার আগেই তিনি নিশ্চিত হয়েছিলেন যে আল্লাহ্ প্রতিটি মানুষের গুনাহ মাফ করে দিয়েছেন। সেই ক্ষমার নিদর্শনই হলো ঘামের বিন্দুগুলি যা তাঁর জোব্বাকে ভিজিয়ে দিয়েছিলো।”
“নবী ﷺ এই জোব্বাটি আমাকে পাঠিয়েছেন, কারণ তিনি আমাকে বলছেন, “ও উয়াইস, আমি তোমার কাছে আল্লাহ্ প্রদত্ত ঐশ্বরিক জ্ঞান দিয়ে যাচ্ছি যা দিয়ে আমার উম্মতের গুনাহ ক্ষমা করা হবে। আমি যেভাবে আপনাকে এই গোপন রহস্য দিয়ে যাচ্ছি, আপনিও ঠিক সেইভাবে আপনার পরবর্তী উত্তরসূরিদের কাছে সেই গোপন রহস্য প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে হস্তান্তর করে দিতে থাকবেন।
সাইয়িদিনা আলি (রা) তখন বললেন,
এরপর সাইয়িদিনা উয়াইস আল কারানি (রা) বললেন, “আমি আল্লাহ্র রসুল ﷺ কে সশরীরে দেখি নাই, কিন্তু তাঁর জীবনের প্রতিদিন প্রতিনিয়ত আমি তাঁর সাথে সাথেই ছিলাম। তাঁর উম্মতের সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্যই আমার কাছে চলে আসতো। আল্লাহ্র আউলিয়া এবং দরবেশদের ভেতরে আমি এই গোপন রহস্য ছড়িয়ে দিতে থাকবো যারা আমাদের কাছে থেকে রুহানীয়তের এই গোপন রহস্য উত্তরাধিকার হিসেবে পাবে। রুহানী যোগাযোগের ভেতর দিয়ে তারা জেনে যাবে কিভাবে নবী ﷺ-র উম্মতের গুনাহ মাফ করিয়ে দিতে হয়। বিচার দিবস পর্যন্ত প্রতি শতাব্দীতে তারা এই রহস্য একজন থেকে আরেকজনের কাছে হস্তান্তর করতে থাকবেন। “
এরপর সাইয়িদিনা আলি (রা) আউলিয়াদের সেই মাহফিলে সবার সামনে আমার দিকে লক্ষ্য করে বলেন, “আপনার কাছে এবং আপনার পূর্বে অতীতে অনেক আউলিয়াকে যে রহস্য হস্তান্তরিত করা হয়েছে তা সেই উয়াইসি যোগাযোগের ক্ষমতা বলেই করা হয়েছে। আপনিই প্রথম আউলিয়া যাকে এই রহস্য হস্তান্তরিত করার জন্য আল্লাহ্র রসুল ﷺ নিজে অনুমতি দিয়েছেন এবং আদেশ করেছেন।”
এরপর আমার শেখ, শেখ শরাফুদ্দিন দাগেস্তানি ق আমাকে বললেন, “ও আমার সন্তান, এখন তুমি তোমার খালওয়াতে ফিরে যেতে পারো।” তিনি এই কথা বলার মুহূর্তের ভেতরে আমি দেখলাম যে আমি সেই মসজিদের সামনে দিয়ে ঢুকে যাচ্ছি আর সেই প্রচন্ড ঠান্ডা আবার ফিরে এসেছে।
আউলিয়ারা বিভিন্ন সময়ে তাদের সুউচ্চ ও মহিমান্বিত পূর্বসূরিদের রুহানী শক্তি ও ক্ষমতা বলে এই ধরনের দর্শন ও রুহানী অভিজ্ঞতা আস্বাদন করে থাকেন।
কপিরাইট 2024 Naqshbandi.org